সন্দ্বীপের রাজনীতির মাটিতে সততা ও আদর্শের প্রতীক —জননেতা মোস্তফা কামাল পাশা এমপি
লেখকঃ নুর হাসান সন্দ্বীপী, যুগ্ম আহবায়ক—গাছুয়া ইউনিয়ন যুবদল
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় টাকার প্রভাব যেন রাজনীতির মূল মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছোট থেকে বড়— ইউনিয়নের চৌকিদার, কেরানি, মেম্বার বা চেয়ারম্যান— যারাই সুযোগ পাচ্ছে, সবাই যেন অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
অর্থই যেন এখন পদ, মর্যাদা ও ক্ষমতার পরিচায়ক।
কিন্তু এই অর্থকেন্দ্রিক রাজনীতির ভিড়ে এমন একজন মানুষ আছেন, যিনি আজও সততা, নীতি ও আদর্শের প্রতীক হয়ে বেঁচে আছেন—
তিনি চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের তিনবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল পাশা।
১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন মোস্তফা কামাল পাশা।
পিতা হাজী আব্দুল বাতেন সওদাগর এবং মাতা বিবি সখিনা বেগম।
যৌবনের শুরুতেই ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে রাজনীতির মাঠে পদার্পণ করেন তিনি।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে, ১৯৭৩ সালে, তিনি বিপুল ভোটে রহমতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
জনগণের অকুণ্ঠ ভালোবাসায় ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা চারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং স্থানীয় উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
১৯৯০ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করে আবারও বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এই জননন্দিত নেতা।
১৯৯৩ সালে ন্যাপ (ভাসানী) থেকে বিএনপিতে যোগ দেন মোস্তফা কামাল পাশা। ১৯৯৬ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির এই পর্যায়ে এসে তিনি শুধু একজন জনপ্রতিনিধি নন—সন্দ্বীপবাসীর কাছে হয়ে ওঠেন বিশ্বাসের প্রতীক।
এক সময় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের দাপটে আতঙ্কে ভরা ছিল সন্দ্বীপ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের সেই অন্ধকার সময়কে আলোয় ফিরিয়ে আনেন মোস্তফা কামাল পাশা।
২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন—
“আমি যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই, সন্দ্বীপ থেকে সন্ত্রাস চিরতরে নির্মূল করব।”
জনগণ তাঁর ওপর আস্থা রাখে, এবং ফলাফলও সেই আস্থার প্রতিফলন— তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন।
অঙ্গীকার রাখেন; মাত্র এক বছরের মধ্যে সন্দ্বীপ হয়ে ওঠে সন্ত্রাসমুক্ত শান্তির দ্বীপ।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মানুষ রাতে দরজা খোলা রেখে ঘুমিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য করেছে নির্ভয়ে।
এই অর্জনই তাঁকে সন্দ্বীপবাসীর হৃদয়ে “শান্তির প্রতীক” হিসেবে রেখেছে।
যখন বর্তমান রাজনীতিতে পিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পর্যন্ত অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক,
তখন তিনবারের এমপি মোস্তফা কামাল পাশা ভাড়া বাসায় বসবাস করেন—নিজস্ব গাড়ি পর্যন্ত নেই।
ব্যক্তিগত জীবনে নির্লোভ, সাহসী ও সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত এই রাজনীতিক ২০১৪ সালে নিজের চিকিৎসার জন্য বাপের রেখে যাওয়া জমি বিক্রি করেন।
রাজনীতি তাঁর কাছে কখনোই অর্থ উপার্জনের মাধ্যম ছিল না; ছিল মানুষের সেবা ও ন্যায়ের সংগ্রামের পথ।
বিগত কয়েক মাস ধরে কিছু কুচক্রী মহল সামাজিক মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালেও
সন্দ্বীপবাসীর ভালোবাসা তাঁকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
যেখানে অনেক নেতা জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন, সেখানে মোস্তফা কামাল পাশা এখনো জনতার হৃদয়ের মণিকোঠায়।
তিনি সন্দ্বীপের রাজনীতিতে এক জীবন্ত কিংবদন্তি।
আজও যখন তিনি রাস্তায় হাঁটেন—মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভিড় জমায়, মিছিল তৈরি হয়।
রাজনীতি মানেই এখন যেখানে অর্থ, সেখানে মোস্তফা কামাল পাশা যেন এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
তিনি প্রমাণ করেছেন—সততা, আদর্শ, ও জনগণের ভালোবাসাই প্রকৃত রাজনীতির ভিত্তি।
সন্দ্বীপের মানুষ আজও বিশ্বাস করে—
একজন মোস্তফা কামাল পাশা মানেই শান্তির প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক, আর সর্বোপরি জনগণের নেতা।