Total Pageviews

Sunday, 22 December 2019

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন - নুর হাসান সন্দ্বীপী


এই কনকনে শীতের মাঝে আপ্নি শুয়ে আছেন? কেন? উঠতে কষ্ট হচ্ছে? নাকি শীতের ভয়ে উঠতে পারছেন না?
একটু কি লক্ষ করেছেন? শীতকে ভয় না করেও আল্লাহর মুমিন বান্দাগণ আল্লাহকে ভয় করে।এই শীতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে থাকেন। জ্বি হ্যাঁ... এটাই সত্যি।

মহান আল্লাহর রহমতে যারা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে তারা নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ কাছে অতি প্রিয় বান্দা।


আপ্নিও একটু কষ্ট করে প্রতিদিন ফজর থেকে শুরু করে বাকি ওয়াক্তের সালাত গুলো আদায় করলে আপনার লাভ বেশি।ঠান্ডার ভয়ে শুধু পাঁচ ওয়াক্ত সালাত বাদ দিলেও ঠান্ডার ভয়ে বাকি কাজ গুলোতো আপনাকে বাদ দিতে দেখি না!
যেমন প্রতিদিন টয়লেট সাড়া থেকে শুরু করে, সকালের নাস্তা এবং তিনবেলা ভাত সহ নানান কিছু খাওয়া।নিজের এবং সংসারে কাজ গুলোতো বাদ দেওয়া হচ্ছে? নাতো!

তবে কেন ঠান্ডার দোহাই দিয়ে আপ্নি সালাত আদায় করা থেকে দূরে আছেন? দয়াকরে একটু ভাবুন। মৃত্যুর পরে আপনাকে ঠান্ডা মাটিতে সারাজীবন শুয়ে থাকতে হবে।হয়তো সালাত আদায় না করার জন্যে আপনাকে জাহান্নামের আগুনে সারাজীবন জ্বলতে হবে।
আপনার আমার আমাদের সকলের অঙ্গীকার হোক।যত শীত হোক না কেন।আজ থেকে আমরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবো।এমনকি একটা ওয়াক্ত সালাত মিস করবো না।

ইসলাম অনেক সহজ এবং পরিপূর্ণ ধর্ম আমি আপ্নি আমরা এটাকে কঠিন হিসাবে চিন্তা করতেছি বলেই এটা কঠিন ধর্মের রুপান্তরিত হয়েছে।
মহান আল্লাহ সবাইকে সত্যের এবং সুন্দের পক্ষে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন।

Wednesday, 11 December 2019

খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর বাংলাদেশী ইসলামি পণ্ডিত ও গবেষক - নুর হাসান সন্দ্বীপী

খোন্দকার আ. ন. ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবকে আমরা কে না চিনি? নিশ্চয়ই আমরা যারা টেলিভিশনের ইসলামিক অনুষ্ঠান গুলো দেখেছি।তারা এই মহান ব্যক্তিটিকে দেখেছি এবং চিনি।

বাংলাদেশের একজন ইসলামী ব্যক্তি, লেখক ও গবেষক। তিনি ছিলেন ইসলামী চিন্তাবিদ, টিভি আলোচক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের অধ্যাপক, বিশিষ্ট ইসলামী পণ্ডিত, গবেষক ও লেখক। তিনি পিস টিভিইসলামিক টিভিএটিএন বাংলাএনটিভিচ্যানেল নাইন সহ বিভিন্ন টিভিতে ইসলামের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন এবং মার্কি‌ন ইসলামী টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভি ইউএস-এর উপদেষ্টা ছিলেন। ধর্মী‌য় বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সহজ ও নম্র ভাষায় বিস্তারিত উত্তর প্রদানে তিনি সমাদৃত ছিলেন।
        খোন্দকার আ. ন. ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

আপনারা যারা এই মহান ব্যক্তিটিকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনেন তারা নিশ্চয়ই জানেন তিনি কেমন মানের লোক ছিলেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওনাকে না চিনলেও, তবে ওনার অনুষ্ঠান আলোচনা ও ওয়াজ গুলো শুনে অনেক ভালো, নম্র ভদ্র মার্জিত মানুষ হিসাবে বিবেচনা করেছি।

তিনি সবসময় ন্যায়পরায়ণ, সঠিক ভাবে ইসলাম প্রচার পাশপাশি ইসলামের নাম দিয়ে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অনেক সুন্দর ভাবে আলোচনা করতেন।তিনি মাজার পূঁজা, পীরের নামে ভন্ডামি সহ নানান বিষয়ে আলোচনা করে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

এখনো ফেসবুক, ইউটিউবে আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের পুরাতন আলোচনার ভক্ত কম নয়।ওনার ভিডিও আলোচনা গুলো মানুষ শুনে এবং শিক্ষা গ্রহণ করে।

প্রাথমিক জীবন, শিক্ষা ও কর্মজীবন

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের জন্ম হয় ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহের ধোপাঘাট গোবিন্দপুর গ্রামে। তার পিতা খোন্দকার আনওয়ারুজ্জামান এবং মাতা বেগম লুৎফুন্নাহার। তিনি ১৯৭৩ সালে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। এরপর একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৭৫ সালে আলিম এবং ১৯৭৭ সালে ফাজিল ও ১৯৭৯ সালে হাদিস বিভাগ থেকে কামিল পাস করার উচ্চতর শিক্ষার জন্যে সৌদিআরব গমন করেন। রিয়াদে অবস্থিত আল ইমাম মুহাম্মদ বিন সউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৮৬ সালে অনার্স, ১৯৯২ সালে মাস্টার্স ও ১৯৯৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। রিয়াদের মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি তৎকালীন রিয়াদের গভর্নর সালমান বিন আবদুল আজিজের হাত থেকে পর পর দু’বার সেরা ছাত্রের পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বাযমুহাম্মদ বিন উসায়মিন, আল জিবরিন ও সালিহ আল-ফাউজান-সহ স্কলারদের সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হন। লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি উত্তর রিয়াদ ইসলামি সেন্টারে দাঈ ও অনুবাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লেখাপড়া শেষ করে ১৯৯৮ সালে কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে ইসলামি উন্নয়ন ও আরবি ভাষা বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালে তিনি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। কর্মজীবনে তিনি ঢাকার দারুস সালাম মাদ্রাসায় খণ্ডকালীন শায়খুল হাদিস হিসেবেও পাঠদান করতেন।

কর্ম‌কান্ড

তিনি সর্বদা মানুষকে ইসলামমুখী করার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। মানুষের ইসলামী উন্নতির চিন্তা করতেন। এজন্য তিনি এলাকার মুসলামানদের ইসলামী শিক্ষাকে সহজ করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইসলাম-শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন। এক্ষেত্রে তিনি ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই পৃথকভাবে পর্দার সাথে কুরআন হিফয করা ও অন্যান্য ইসলামী শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও সাধারণ শিক্ষিত মানুষদের ইসলামী জ্ঞান লাভ সহজ করার লক্ষ্যে বাংলাভাষায় ধর্মীয় বই-পুস্তক রচনা করেছেন। তার মধ্যে একটি চিন্তা ছিলো সমাজের মানুষের পরিবর্তন দরকার, মহিলাদের পরিবর্তন দরকার। তাদেরকে খারাপ পরিবেশ থেকে বাঁচিয়ে ভালো কাজে সম্পৃক্ত করা দরকার। এজন্য এলাকাবাসীদের নিয়ে তার মসজিদে নিয়মিত মাসিক মাহফিলের পাশাপাশি বার্ষিক মাহফিলের আয়োজন করতেন। এলাকার অন্যান্য মসজিদেও মাসিক মাহফিল আয়োজনের চেষ্টা করেছেন এবং তিনি নিজে বা তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে মাহফিলগুলোর মাধ্যমে মানুষের মাঝে ইসলামী সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করতেন। বাংলাদেশে খ্রিস্টান ধর্মান্তকরণ ও খ্রিস্টান মিশনারীদের তৎপরতার প্রতিরোধে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। ওয়াজ-মাহফিল ও বিভিন্ন রচনার মাধ্যমে তিনি তাদের সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এছাড়াও স্থানীয় আলেম ও ইমামগণকে নিয়ে ইলমী ইজতিমার আয়োজন করেন। ইসলাম প্রচারে তার বহুমুখী পদক্ষেপসমূহ নিম্নরূপ

মৃত্যু

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর ২০১৬ সালের ১১ই মে মাগুরায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নিজ মাইক্রোবাস ও কাভার্ড‌ভ্যানের সংঘর্ষে গাড়িচাপার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে নিহত হন। কিছু স্থানীয় আলেম দাবি করেন যে, খ্রিষ্টান মিশনারিগুলোর প্রচারনার বিরুদ্ধে ধর্মীয় প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করার কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ১৮ মে ২০১৬ তারিখে, তার নিজ কর্মস্থল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার স্মরণে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৪ জুন ২০১৬ তারিখে আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের স্মরণে বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ কর্তৃ‌ক আয়জিত আলোচনা সভায় বক্তারা তাকে "নিরহংকারী আলেম" অভিহিত করে বলেন, "তিনি বড় মাপের একজন জ্ঞানী হওয়া সত্ত্বেও কখনই অহংকার আসতে পারে এমন কোন কথা বলতে ও কাজ করতে আমরা দেখিনি। কঠিন ও জটিল মাসয়ালাকে সহজভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। তিনি নির্মল হদয়ের একজন মানুষ ছিলেন।